মধ্যযুগীয় ইউরপের আদিনারীবাদের ভূমিকা
গত পর্বে আদিনারীবাদের সংজ্ঞা এবং প্রাচীন গ্রিস, রোম ও মধ্যযুগীয় মুসলিম বিশ্বের আদিনারীবাদ নিয়ে আলোচনা করেছি। এবারে মধ্যযুগের ইউরোপে আদিনারীবাদে আলোচনায় যাচ্ছি। এই লেখায় ১০ থেকে ১৫শ শতকের আদিনারীবাদ নিয়েই আলোচনা হচ্ছে, তবে ১৫শ শতকের আলোচনায় কেবল এই শতকের প্রথমার্ধের আদিনারীবাদই রাখা হবে, এই শতকের দ্বিতীয়ার্ধের আদিনারীবাদের আলোচনা চলে যাবে পরের পর্বে।
মধ্যযুগীয় ইউরোপে মনে করা হত যে নারীরা বুদ্ধিতে ও নৈতিকতায় পুরুষের চেয়ে দুর্বল। আর মানুষেরা তাদের এই ধারণাকে জাস্টাফাই করত বাইবেলের কাহিনী দিয়ে। স্বর্গে ইভের পাপের কারণে মানুষকে পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে দুঃখ দুর্দশা সহ্য করে হয়। ইভ নারী ছিলেন, তাই মরের সব নারীর বুদ্ধি ও নৈতিকতাই “ইভের মত কম”! নারীদের উপর অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করা হত আর সেগুলোর ন্যায্যতা হিসাবে ইভের ঐ গল্পকে ব্যবহার করা হত। এইসব বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল নারীর সম্পত্তির অধিকার না থাকা, এবং সবসময় পিতা বা স্বামী কথা মেনে চলতে বাধ্য থাকা।[৪২] কিন্তু মধ্যযুগেই এরকম দৃষ্টিভঙ্গি, ও সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তৈরি হওয়া বিভিন্ন বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তৈরি হয়েছিল। মধ্যযুগের যেসব আদিনারীবাদীগণ নারীবাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন হ্রোৎস্ভিতা, মারি ডি ফ্রান্স, এলেনর অফ অ্যাকুইটাইন, বেত্তিসিয়া গোজ্জাদিনি, নিকোলা দে লা হেয়ি এবং ক্রিস্টিন দে পিজঁ।[৪৩]
এলেনর অফ অ্যাকুইটাইন ও ক্রিস্টিন দে পিজঁকে নিয়ে পরে আলোচনা করা হবে। অন্যদের বিষয়ে কিছু কথা বলে নেয়া যাক। হ্রোৎস্ভিতা (Hrotsvitha, ৯৩৫-৯৭৩ খ্রি.) একজন জার্মান সেক্যুলার ক্যাননেস ও নান ছিলেন। তিনি অটোনিয়ান রাজ্যের রাজত্বকালে নাটক ও কবিতা লিখেছেন। তাকে জার্মানি অঞ্চলের প্রথম লেখিকা ছিলেন, সেই সাথে ছিলেন জার্মানির প্রথম নারী ঐতিহাসিক, এন্টিকুইটির যুগের পর তিনিই প্রথম পশ্চিম ইউরোপে নাটক লেখেন (নারী ও পুরুষ সকলের মধ্যেই প্রথম),[৪৪] সেই সাথে তিনি জার্মানির প্রথম নারী কবিও ছিলেন।[৪৫] তার রচিত ছয়টি ছোট নাটককে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম বলে বিবেচনা করা হয়। নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাস লিখেছেন এরকম খুব কম ঐতিহাসিকই রয়েছেন, এর মধ্যে তিনি একজন।[৪৬] তাকে তার যুগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।[৪৭] তিনি জার্মান হলেও তার সব লেখাই ল্যাটিন আষায়। ১৬০০ এর শতকে তার রচনাগুলো আবিষ্কার ও অনুবাদ করা হয়।[৪৮] ১৯৭০ এর দশকে নারীবাদীরা তার কাজগুলোকে নারীবাদী ও জেন্ডার সংক্রান্ত প্রসঙ্গের আলোকে পুনরাবিষ্কার করা শুরু করে।[৪৯][৫০] তারা দেখান যে অতীতে নারীরা সমাজে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু সমাজ তাদেরকে মনে রাখেনি, বিস্মৃত হয়েছে।[৫১] তার লেখায় বাইবেলীয় ন্যারেটিভ পাওয়া যায়।[৫২] বাইবেলের মতো তিনিও ভাবতেন যে নারীরা শারীরিক ও বুদ্ধিগতভাবে পুরুষের তুলনায় হীনতর। এছাড়া এও ভাবতেন যে তার নিজের যত মহৎ কাজ আছে সব ঈশ্বরেরই, তার নয়।[৫৩] যাই হোক, তিনি মনে করতেন, নারী নিজেকে যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত রাখা ও আত্ম-নির্ণয়ের ক্ষমতা আছে, এই চিন্তাকে তখনকার দিনে খুব প্রগতিশীল হিসেবে দেখা হতো। তিনি নারীকে সৎ, সাহসী, বুদ্ধিমতী ও ঈশ্বরের নিকটতর বলে দাবি করেছেন। বলেছেন যে, নারীরা দুর্বল লিঙ্গ বলে তার মধ্যে ঈশ্বর বেশি করে প্রবেশ করতে পারে এবং তারা বেশি করে ঈশ্বরের করুণা লাভ করে। এভাবে নারীরা দুর্বল হলেও ঈশ্বরের কাছে নারীরা পুরুষেরই সমান। তিনি ভাবতেন নারীর জন্য যিশুর উদ্দেশ্যে কুমারী থাকাই সর্বোত্তম, কিন্তু তিনি যৌনকর্মীদের প্রতিও সহানুভূতিশীলতা দেখিয়েছেন।[৫৪] এখান থেক বোঝা যায় তিনি তদকালীন নারীর জীবন সম্পর্কে সূক্ষ্ম অন্তর্দৃষ্টি ধারণ করতেন।[৫৫] তার নাটকগুলো তদকালীন সমাজের বিবাহ, ধর্ষণ এবং নারীর সামগ্রিকীকরণ বা অবজেক্টিফিকেশন বা নারীকে সামগ্রী বা অবজেক্ট হিসেবে দেখার বিষয়ে আলোকপাত করে।[৫৬] তার “Dulcitius” ও “Callimach” নাটক দুটো ধর্ষণকে কেন্দ্র করে বানানো, সেই সময়ে ধর্ষণ নারীর জন্য খুব সাধারণ ধরণের নির্যাতন ছিল।[৫৭] একই সাথে তিনি নাটকদুটোতে এও দেখিয়েছেন যে ধর্ম নারীকে স্বাধীনতা ও মুক্তি দিতে পারে, তাদের ক্ষমতায়ন করতে পারে।[৫৮]
মারি ডি ফ্রান্স (Marie de France) ( ১১৬০ খ্রি. – ১২১৫ খ্রি.) ছিলেন ১২শ শতকের একজন কবি, যাকে ফ্রান্সের প্রথম নারী কবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি অনেক ফ্যাবলস বা উপদেশমূলক গল্প লিখেছিলেন যেগুলোর মধ্যে তিনি ঈশপের অনেক গল্পের ইংরেজিতে অনুবাদও ছিল। তার এই ফ্যাবলগুলোতে নারী চরিত্রগুলোকে শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, তিনি অনেক নারী-কেন্দ্রিক ফ্যাবলও লিখেছেন।[৫৯] বেত্তিসিয়া গোজ্জাদিনি (Bettisia Gozzadini ) (১২০৯ খ্রি. – ১২৬১ খ্রি.) একজন আইনজীবী ছিলেন এবং তিনি ১২৩৯ সালের দিকে বলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাসনা করতেন। তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করা প্রথম নারী হিসেবে বিবেচিত হন। গোজ্জাদিনি সম্পর্কে আরেকটি লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে তিনি পুরুষের পোশাক পড়তেন। অবশ্য জানা যায় নি যে তিনি তা সামাজিক চাপে পড়তেন নাকি ব্যক্তিগত ইচ্ছাতেই পড়তেন।[৬০] গোজ্জাদিনি একজন অসাধারণ বাগ্মীও ছিলেন। নিকোলা দে লা হেয়ি (Nicola de la Haye) (মৃত্যু ১২৩০ খ্রি.) ছিলেন একজন জমিদার ছিলেন। তিনি তার পিতার থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে কেবল ইংল্যান্ড ও নরম্যান্ডিতে জমিই লাভ করেননি, সেই সাথে লিংকনশায়ার এর শেরিফ ও লিংকন দুর্গের কনস্টেবলও হয়েছিলেন। দুর্গের প্রধান কার্যাবাহীকে কনস্টেবল বলা হত। আর তিনি দুর্গের দায়িত্বপালনরত অবস্থায় দুবার দীর্ঘকালব্যাপী অবরোধের হাত থেকে দুর্গটিকে প্রতিরক্ষা করেছিলেন। বৃদ্ধ বয়সের জন্য অবসরপ্রাপ্তির আগ পর্যন্ত তিনিই সেই দুর্গের দায়িত্ব পালন করেন।[৬১][৬২
কোর্টলি লাভ, শিভ্যালরি ও এলেনর অফ অ্যাকুইটাইন
এলেনর অফ অ্যাকুইটাইন (১১২২ বা ১১২৪ খ্রি. – ১২০৪ খ্রি.) ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে রাণী থাকার সময়কালে সেই দুই দেশে কোর্টলি লাভ (courtly love) এর ধারণা নিয়ে এসেছিলেন। কোর্টলি লাভ হচ্ছে একটি সাহিত্যিক ধারণা যার দ্বারা সম্ভ্রান্ত নারীদের বিবাহবহির্ভূত প্রেমসর্বস্ব ভালোবাসাকে বোঝানো হয়।[৬৩][৬৪] সেই সময় সম্ভ্রান্ত পরিবারে বিবাহ রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কারণে হত। সম্ভ্রান্তদের এই বিয়েতে প্রেম সম্পর্কে যে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে তা সেভাবে ছিল না।[৬৫] কোর্টলি লাভকে তাই বৈবাহিক সম্পর্কে যে ভালোবাসার অভাব রয়েছে তার প্রকাশের একটা উপায় বলা যায়।[৬৬] সেই সময় লিরিক কবিতাগুলোতে কোর্টলি লাভ এর ধারণা তৈরি হয় ও সম্ভ্রান্তদের মধ্যে এই ধারণাটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই ভালোবাসায় শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ ছিল, কেবল কেবল দেহহীন প্রেমই অনুমোদিত ছিল।[৬৭] তবে কিছু কিছু সাহিত্যে দৈহিক সম্পর্কও দেখা যায়। এলেনরই যে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে কোর্টলি লাভ এর ধারণা প্রথম প্রচলন করেন তা জোড় দিয়ে বলা যায় না, কিন্তু তিনি যে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ছিলেন ও এর পেছনে তার একটা বিশাল অবদান আছে তা স্বীকার করতেই হয়।[৬৮]
সাহিত্যে এরকম প্রেমের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তার অস্তিত্ব ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।[৬৯] তবে কেউ কেউ মনে করেন এলেনরের পয়টিয়ের এর কোর্টে কোর্টলি লাভের চর্চা হত। এরকম সাহিত্যগুলোতে শিভালরি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। শিভালরি দ্বারা নাইটদের আচরণবিধি বোঝানো হলেও নারীদেরকে সম্মান করাও সেসময় শিভালরির অংশ হয়ে ওঠে।[৭০] আর সেটা সেই সময়ে যখন নারীদেরকে পাপী মনে করার প্রবণতা ছিল, তাদেরকে বুদ্ধিতে ও নৈতিকতায় দুর্বল মনে করা হত। মেরিওলজি (যিশুর মা মেরিকে নিয়ে স্টাডি) নামক থিওলজিকাল আইডিয়া জনপ্রিয় হবার সাথে সাথে মধ্যযুগে নারীদের সম্মান কিছুটা বৃদ্ধি পায়।[৭১] শিভালরিতে তার প্রভাব রয়েছে।
অনেক বিশ্লেষকই কোর্টলি লাভকে তদকালীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামন্ততন্ত্র, পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে দেখে।[৭২][৭৩] আবার অনেকে একে সেইসময়কার নারীদের ভালোবাসাহীন বন্দী জীবন থেকে মুক্তি হিসেবে দেখেন। বোঝাই যাচ্ছে, তদকালীন ধর্মীয় সমাজ এই ব্যাপারটিকে ভালভাবে নেয় নি। ত্রয়োদশ শতক থেকে কোর্টলি লাভের প্রতি নিন্দা শুরু হয়। চার্চ একে “sexual rebellion” বা “যৌন বিদ্রোহ” বলে উল্লেখ করেন।[৭৪][৭৫] আরেক আদিনারীবাদী ক্রিস্টিন দে পিজঁ তার ১৪০৩ সালে প্রকাশিত কার্টেসি গ্রন্থ বুক অফ থ্রি ভারচুস (Le Livre des trois vertus)-এ কোর্টলি লাভকে অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের জাস্টিফিকেশন হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
এলেনর অফ অ্যাকুইটাইন এর পয়টিয়ের এর কোর্ট আরেকটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে প্রেম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। ১২শ শতকের লেখক এন্ড্রিয়াস ক্যাপেলেনাস তার দি আর্ট অফ কোর্টলি লাভ গ্রন্থে লেখেন, এলেনর, তার কন্যা মেরি, নারবোন এর ভিসকাউন্টেস আরমেনগার্দ ও ইসাবেল অফ ফ্লেন্ডার্স সেই কোর্টে বসে প্রেমিক প্রেমিকাদের ঝগড়া শুনতেন এবং বিচারকমণ্ডলী হিসেবে কাজ করতেন। এন্ড্রিয়াস এরকম ২১টি কেস নথিবদ্ধ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে একটি কেস খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেখানে যে প্রশ্নটি উত্থাপিত হয়েছিল সেটি ছিল “বৈবাহিক সম্পর্কে কি সত্যিকারের ভালোবাসা থাকে?” বিচারকমণ্ডলী সিদ্ধান্তে আসেন, “বৈবাহিক সম্পর্কে সত্যিকারের ভালোবাসা একেবারেই সম্ভব নয়”।[৭৬] যাই হোক, ইউরোপের মধ্যযুগের আদিনারীবাদের আলোচনায় কোর্টলি লাভ ও শিভালরি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার, কিন্তু পরিসর সীমিত থাকায় এই ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।
যুক্তরাজ্যের ১৩৮১ এর কৃষক বিদ্রোহে নারীর ভূমিকা
১৩৮১ সালের কৃষক বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ ভূমিদাসত্বের বিরুদ্ধে শেষ মধ্যযুগীয় বিদ্রোহ, এবং এই বিদ্রোহে অনেক নারী বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিল। এই বিদ্রোহের একটি অন্যতম ঘটনা সম্পর্কে জানা যাক। দিনটি ছিল ১৩৮১ সালের ১৪ জুন, সেদিন লর্ড চ্যান্সেলর এবং ক্যান্টারবেরি এর আর্চবিশপ সাইমন অফ সাডবারিকে টাওয়ার অফ লণ্ডন থেকে টানতে টানতে নিয়ে আসা হয় এবং তার শিরশ্ছেদ করা হয়। কৃষক বিদ্রোহীদের যে দলটি এই কাজ করে তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জোহানা ফেরোউর নামে এক নারী যিনি সাডবারির মাত্রাতিরিক্ত করারোপণের জন্য এই কঠোর পদক্ষেপের আদেশ দেন।[৭৭] সাইমন অফ সাডবারির সেই নিষ্ঠুর করাদায়ে অবদান রাখার জন্য ফেরোউর লর্ড হাই ট্রিজার বা কোষাধ্যক্ষ স্যার রবার্ট হেলসের বেলাতেও শিরশ্ছেদের আদেশ দেন।[৭৮] বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ফেরোউর স্যাভয় প্রাসাদটি পুড়িয়ে দেন এবং ডিউক এর সোনা ভরা সিন্দুক চুরি করেন। প্রধান বিচারপতি জন ক্যাভেন্ডিশও শিরশ্ছেদের শিকার হয়েছিলেন। তার বেলায় সেই শিরোশ্চেদের আদেশ দিয়েছিলেন ক্যাথেরিন গামেন, তিনি এই বিদ্রোহের আরেকজন নারী নেত্রী ছিলেন।[৭৮]
বেটস কলেজের ইংরেজির সহযোগী অধ্যাপক সিলভিয়া ফেডেরিকোর মতে, বিদ্রোহে অংশগ্রহন করার ক্ষেত্রে নারীরা প্রায়শই দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করত, আর এই বিদ্রোহের বেলায় তারা অনেক বেশি আগ্রহীও ছিল। বিদ্রোহটিতে পুরুষেরা যা যা করেছিল নারীরাও তাই তাই করেছিল, তারা এই সরকার-বিরোধী বিদ্রোহে পুরুষদের মতই সহিংস ছিল। এই বিদ্রোহে নেতাদের মধ্যে কেবল জোহানা ফেরোউরই একমাত্র নারী ছিলেন না, সেখানে আরো কয়েকজন নারী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে একজন নেত্রী কেন্ট এর মেইডস্টোন কারাগারের বিরুদ্ধে একটি হামলায় উৎসাহ প্রদানের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, আরেকজন নেত্রী অনেকগুলি প্রাসাদ লুণ্ঠনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। সেই লুণ্ঠনের ক্ষেত্রে প্রাসাদগুলোর দাসগণ এতটাই ভয় পেয়েছিল যে পরবর্তীতে তারা আর কখনই সেই প্রাসাদগুলোতে ফিরে যাওয়াকে যথেষ্ট নিরাপদ বলে মনে করে নি। যদিও এই বিদ্রোহে নেত্রীদের সংখ্যা অনেক ছিল না, কিন্তু বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী উন্মত্ত জনতার মধ্যে নারীর সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে অনেক বেশি ছিল। যেমন স্যাফকে ৭০ জন নারী বিদ্রোহী ছিল।[৭৯]
এই বিদ্রোহে নারীদের অংশগ্রহণের জন্য এবং কিছু ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানের ভূমিকা পালন করার জন্য উপযুক্ত কারণ ছিল। মধ্যযুগের ইউরোপে পোল ট্যাক্স বলে একটি বিশেষ রকমের করের চল ছিল, প্রতি ব্যক্তির উপর যে কর আরোপিত হত তাকেই পোল ট্যাক্স বলা হত। ব্যক্তি উপার্জন করুক বা না করুক, তার জমিজমা থাকুক বা না থাকুক, তার উপর এই কর আরোপিত হতই। নারী-পুরুষ সকলের উপরেই এই কর আরোপিত হত। ১৩৮০ সালে বিবাহিত নারীদের উপর আরোপিত পোল ট্যাক্স এর পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। তাই এই বিদ্রোহে পুরুষের মত নারীর সহিংস অংশগ্রহণে অবাক হবার কিছুই ছিল না। সেইসময় নারীদের দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ঘৃণাকে তুলে ধরে।[৭৯]
ক্রিস্তিন দে পিজঁ

ক্রিস্তিন দে পিজঁ (Christine de Pizan) (১৩৬৪ খ্রি. – ১৪৩০ খ্রি.) একজন ইতালীয় এবং ফরাসি লেখিকা ছিলেন। নারীদের জন্য তার দ্য বুক অফ দ্য সিটি অফ লেডিস এবং দ্য ট্রেজার অফ দ্য সিটি অফ লেডিস গ্রন্থের জন্য তাকে সব থেকে বেশি স্মরণ করা হয়। মধ্যযুগীয় ফ্রান্সে ক্রিস্তিন ছিলেন বিশিষ্ট নীতিবিদ ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ।
ক্রিস্তিন গদ্য ও পদ্য দুইভাবেই অনেক লেখালিখি করেছেন। তার রচনাগুলোর মধ্যে, রাজনৈতিক গ্রন্থ, মিররস ফর প্রিন্সেস (একটি সাহিত্যিক ঘরানা), চিঠি এবং কবিতা রয়েছে। ক্রিস্তিনের গ্রন্থ লে ডিত দে লা রোজ (দ্য টেল অফ দ্য রোজ) প্রকাশিত হয়েছিল ১৪০২ সালে জঁ দে মিউঁ এর অত্যন্ত জনপ্রিয় বই রোম্যান্স অফ দ্য রোজ এর প্রতিবাদ হিসেবে। রোম্যান্স অফ দ্য রোজ গ্রন্থে নারীকে প্ররোচক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ক্রিস্তিন দাবি করেছিলেন যে মিউনের দৃষ্টিভঙ্গিগুলি নারীবিদ্বেষী, অশ্লীল, অনৈতিক, এবং নারীদের অপমানজনক ছিল। এর পর শুরু হয়ে যায় ক্রিস্তিনের সাথে মিউঁ এর পত্রদ্বন্দ্ব। দুজনই অনেকবার নিজেদের মধ্যে চিঠি আদান-প্রদান করেন এবং কেউই কাউকে এতটুকু ছাড় না দিয়ে প্রত্যেকেই নিজেকেই সমর্থন করে যান। শেষে এক পর্যায় ক্রিস্তিন কুইরেলে ডু রোমান দে লা রোজ (লেটারস অন দ্য ডিবেট অফ দ্য রোজ) প্রকাশ করেন।[৮১] এখানে ক্রিস্তিন এই বিষয়ে তার সমস্ত যুক্তি তুলে ধরেন। তবে এটি নিছকই যুক্তির এপোলোজেটিক টাইপের বই ছিল না, এখানে ক্রিস্তিন তার নিজস্ব রচনাশৈলীকে ব্যবহার না করে ব্যবহার করেছিলেন এক বিশেষ রকমের আলঙ্কারিক কৌশলকে, যা আজ এন্টিফ্রাসিস নামে পরিচিত।[৮২]
১৪০৫ খ্রিস্টাব্দে ক্রিস্তিন তার সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম, দ্য বুক অফ দ্য সিটি অফ লেডিজ (Le Livre de la cité des dames) এবং দ্য ট্রেজার অফ দ্য সিটি অফ লেডিজ (Le Livre des trois vertus) গ্রন্থ দুটি প্রকাশ করেছিলেন। এগুলির মধ্যে প্রথমটি সমাজের নারীর অতীত অবদানগুলির গুরুত্বকে দেখায় এবং দ্বিতীয়টি সকল এস্টেটের নারীকে কীভাবে দরকারী গুণাবলির বিকাশ করতে হয় সেই বিষয়ে শিক্ষা দেয়।[৮৩]দ্য বুক অফ দ্য সিটি অফ লেডিস গ্রন্থে ক্রিস্তিন একটি প্রতীকী শহর তৈরি করেন যেখানে নারীদের কাজের মূল্য দেয়া হয় এবং তাদের সমর্থন করা হয়। তিনি তিনটি রূপক চরিত্র তৈরি করেন – যুক্তি, ন্যায়, এবং সততা। সেই যুগে বিভিন্ন ধারণা ও আবেগ প্রকাশের জন্য এরকম রূপক চরিত্র তৈরি করা সাহিত্যের একটি সাধারণ ধারা ছিল, এবং বিভিন্ন গ্রন্থে ও কাব্যে এই চরিত্রগুলোকে দেখা যায়। এই তিন চরিত্রদেরকে দিয়ে তিনি সংলাপ তৈরি করেন, বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর তৈরি করেন, আর পুরোটাই করা হয়েছিল নারীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।[৮৪] একসাথে তারা নারীদের সমস্যা ও পরিণতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন। কেবল নারীর কথা, উদাহরণ ও মতামত এই রচনায় বিভিন্ন সাখ্যপ্রমাণ হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে। সেই গ্রন্থে যুক্তি নামক চরিত্রটির মধ্য দিয়ে ক্রিস্তিন বলেছিলেন নারীদের নিয়ে স্টিরিওটাইপ বা প্রচলিত ধ্যান ধারণাগুলো ততদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে যতদিন পর্যন্ত না তাদেরকে আলাপ আলোচনাগুলোতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হবে।[৮৫] মধ্যযুগীয় ইউরোপে নারী ও পুরুষের নৈতিকতার মধ্যে পার্থক্য একটি অন্যতম বিতর্কের বিষয় ছিল। সিটি অফ লেডিস গ্রন্থে ক্রিস্তিন এই বিতর্কটি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। বিশেষ করে তিনি এরিস্টোটলীয় ভারচু এথিক্স ও নারী নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গিকে সেই গ্রন্থে নিয়ে আসেন।[৮৬] ক্রিস্তিন বারবার ধর্মতাত্ত্বিক যুক্তি ব্যবহার করে বলেছেন, পুরুষ এবং নারী ঈশ্বরের চিত্র অনুযায়ী তৈরি হয় এবং উভয়ের আত্মাই ঈশ্বরের সদ্গুণকে প্রাপ্ত করতে সক্ষম।
ট্রেজার অফ দ্য সিটি অফ লেডিস গ্রন্থে ক্রিস্তিন শহরের নারী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, এবং কিভাবে নারী সদ্গুণ বা নৈতিকতা অর্জন করবে তার নির্দেশনা দেন। এই গ্রন্থে তিনি এই অবস্থান নেন যে, সকল নারী নম্রতা, অধ্যবসায় ও সততা অর্জন করতে সক্ষম, এবং যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণ করা সকল নারী সিটি অফ লেইডিস এর সুযোগ্য নাগরিক হতে পারেন। তিনি নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে নারীদেরকে উপদেশ দিয়ে বলেন যে কিভাবে ১৫শ শতকের ফরাসী সমাজে নারীর উপর আসা বাঁধাগুলোকে কাটিয়ে ওঠা যায়।[৮৭] অগাস্টিন অফ হিপ্পো ও অন্যান্য সেইন্টের সূত্র দিয়ে ক্রিস্তিন সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়দেরকে উপদেশ দিয়েছেন যে কিকরে ঈশ্বরের ভালোবাসা অর্জন করা যায়। ক্রিস্তিন ঈশ্বরের কন্যা হিসেবে যুক্তি, সততা ও ন্যায়কে রূপক চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করে তাদের মধ্য দিয়ে সেই গ্রন্থে লিখেছেন। এই তিন কণ্যা সেইসব সদ্গুণের প্রতিনিধিত্ব করে যেগুলো নারীরের সাফল্যের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এইসব সদ্গুণগুলোর ধর্মনিরপেক্ষ উদাহরণ প্রদানের মাধ্যমে ক্রিস্তিন নারীদেরকে তাদের জীবনের অর্থের সন্ধান করতে এবং মূল্যবান কাজ করতে প্রেরণা দেন। ক্রিস্তিন বলেন নারীর সাফল্য তাদের কার্যকরীভাবে কথা বলতে ও লিখতে পারার মধ্য দিয়ে ব্যবস্থাপনা ও মধ্যস্থতা করার মধ্যে নিহিত থাকে।[৮৮]
ক্রিস্তিন তার জীবনকাল ৪১টি সুপরিচিত কবিতা ও গদ্য প্রকাশ করেছেন এবং তিনি প্রথম পেশাদার নারী লেখক হিসাবে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি এতটাই বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন যে তার গদ্যের জন্য রয়্যালটি দেয়া হতেবং সমসাময়িক বুদ্ধিজীবীগণ তাদের গ্রন্থাগারগুলোতে ক্রিস্তিনের বইগুলোর কপি রাখতেন।[৮৯] ক্রিস্তিনের রাজনৈতিক লেখাগুলিও কিছু মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। Livre de la paix গ্রন্থটিকে মানবতাবাদী গ্যাব্রিয়েল নৌদা সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেন এবং দেনিস দিদেরো, লুই মরেরি এবং প্রোসপার মাখশঁ তাদের বিশ্বকোষে ক্রিস্তিনকে নিয়ে অনেক বড় নিবন্ধ অন্তর্ভূক্ত করেছেন।[৯০] প্রয়োজনীয় সেনাবাহিনী ও উপাদানগুলো নিয়ে লেখা গ্রন্থটি ক্রিস্তিন Livre des fais d’armes et de chevalerie নামে ১৪১০ সালে প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু এই সব গ্রন্থ পরবর্তিতে বিখ্যাত হলেও পরে সেগুলো থেকে ক্রিস্তিনের নাম হারিয়ে যেতে থাকে।
ক্রিস্টিনের লেখায় প্রাচীন দর্শন এবং মানবতাবাদী আদর্শের মিশ্রণ ঘটেছিল। আর তার লেখার শৈলী ছিল সেসময়কার জনপ্রিয় লেখকদের মতই। নারীদের সমর্থনে তার স্পষ্টভাষিতা ছিল সেই সময়ের জন্য একটি ব্যতিক্রম। তিনি তার লেখায় সমাজের প্রচলিত নারীবিদ্বেষী মনোভাব এবং ওভিদের আর্ট অফ লাভ, জ্য দে মিউঁ এর রোমান্স অফ দ্য রোজ এবং ম্যাথেওলাস এর ল্যামেন্টেশনস এর মত জনপ্রিয় নারীবিদ্বেষী রচনাগুলোর প্রতিবাদ করেছেন। তার সক্রিয়তা আধুনিক নারীবাদীদেরকে মুগ্ধ করেছে ও প্রেরণা জুগিয়েছে।[৯১] নারীদের জন্য এত অবদান রাখা ক্রিস্তিন ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যান। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে চ্যারিটি ক্যানন উইলার্ড, আর্ল জেফ্রি রিচার্ডস এবং সিমোন দ্য বোভোয়ারের মত পণ্ডিতদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্রিসটিনের কাজগুলো পুনরায় মানুষের নজরে এসেছে। সিমোন দ্য বোভোয়ার ১৯৪৯ সালে লেখেন, ক্রিস্তিনের Épître au Dieu d’Amour গ্রন্থেই প্রথমবারের মত একজন নারী তার লিঙ্গের সমর্থনে কলম ধরেছিলেন।[৯২]
(চলবে)
তথ্যসূত্র
৪২। “Women in medieval society”। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-২৭।
৪৩। Blain, Virginia, et al. The Feminist Companion to Literature in English (Yale UP, 1990)
৪৪। “Hrotsvitha – Name’s Meaning of Hrotsvitha”। Name-Doctor.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৩।
৪৫। Bayerschmidt, Carl F. (১৯৬৬-১১-০১)। “Hroswitha of Gandersheim. Her Life, Times and Works, and a Comprehensive Bibliography. Edited by Anne Lyon Haight”। The Germanic Review: Literature, Culture, Theory। 41 (4): 302–303। আইএসএসএন 0016-8890। ডিওআই:10.1080/19306962.1966.11754646।
৪৬। Frankforter, A. Daniel (ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)। “Hroswitha of Gandersheim and the Destiny of Women”। The Historian। 41 (2): 295–314। আইএসএসএন 0018-2370। ডিওআই:10.1111/j.1540-6563.1979.tb00548.x।
৪৭। Emily McFarlan Miller (২০১৯-০৩-২০)। “Hrotsvitha vs. Gobnait”। Lent Madness (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-২৩।
৪৮। Frankforter, A. Daniel (ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)। “Hroswitha of Gandersheim and the Destiny of Women”। The Historian। 41 (2): 295–314। আইএসএসএন 0018-2370। ডিওআই:10.1111/j.1540-6563.1979.tb00548.x।
৪৯। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫০। Homans, Margaret (১৯৯৪)। “Feminist Fictions and Feminist Theories of Narrative”। Narrative। 2 (1): 3–16। আইএসএসএন 1063-3685। জেস্টোর 20107020।
৫১। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫২। Butler, Colleen (২০১৬)। “Queering The Classics: Gender, Genre, and Reception In The Works of Hrotsvit of Gandersheim”।
৫৩। Frankforter, A. Daniel (ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)। “Hroswitha of Gandersheim and the Destiny of Women”। The Historian। 41 (2): 295–314। আইএসএসএন 0018-2370। ডিওআই:10.1111/j.1540-6563.1979.tb00548.x।
৫৪। Frankforter, A. Daniel (ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯)। “Hroswitha of Gandersheim and the Destiny of Women”। The Historian। 41 (2): 295–314। আইএসএসএন 0018-2370। ডিওআই:10.1111/j.1540-6563.1979.tb00548.x।
৫৫। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫৬। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫৭। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫৮। Case, Sue-Ellen (ডিসেম্বর ১৯৮৩)। “Re-Viewing Hrotsvit”। Theatre Journal। 35 (4): 533–542। জেস্টোর 3207334। ডিওআই:10.2307/3207334।
৫৯। Gilbert, Dorothy (২০১৫)। Marie de France Poetry। New York: W W Norton & Co। পৃষ্ঠা 191–3। আইএসবিএন 9780393932683।
৬০। Busto di dama bolognese illustre – Bettisia Gozzadini (in Italian). Museo della Città di Bologna. Accessed April 2016.
৬১। Johns, Susan M. (২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। “Haie, Nicola de la (d. 1230)”। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/47223। (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)
৬২। Golding, Brian (২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৬)। “Canville [Camville], Gerard de (d. 1214)”। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি (অনলাইন সংস্করণ)। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। ডিওআই:10.1093/ref:odnb/4543। (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন।)
৬৩। Stevens, John (১৯৭৯)। Music & Poetry in the Early Tudor Court। New York: Cambridge University Press।
৬৪। Newman, F. X. (১৯৬৮)। The Meaning of Courtly Love। Albany: State University of New York।
৬৫। “Courtly love”। Middle Ages.com। ২০০৭-০৫-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৮।
৬৬। “Courtly Love and the origins of romance”। Wsu.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৮।
৬৭। “A History of Women: Silences of the Middle Ages”। Employees.oneonta.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৮।
৬৮। Kelly, Amy (১৯৩৭-০১-০১)। “Eleanor of Aquitaine and Her Courts of Love”। Speculum। 12 (1): 3–19। আইএসএসএন 0038-7134। ডিওআই:10.2307/2848658।
৬৯। John F. Benton, “The Evidence for Andreas Capellanus Re-examined Again”, in Studies in Philology, 59 (1962); and “The Court of Champagne as a Literary Center”, in Speculum, 36(1961).
৭০। Sweeney (1983), Sweeney, James Ross (1983). “Chivalry”. Dictionary of the Middle Ages. III., পৃ. 91-93
৭১। Tucker (1987), Tucker, Ruth (1987). Daughters of the Church. ISBN 978-0-310-45741-1, পৃ. 168
৭২। “Deirdre O’Siodhachain, The Practice of Courtly Love”। Eleanorofaquitaine.net। ২০০৮-০৮-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৮।
৭৩। This analysis is heavily informed by the Chivalric–Matriarchal reading of courtly love, put forth by critics such as Thomas Warton and Karl Vossler. This theory considers courtly love as the intersection between the theocratic Catholic Church and “Germanic/Celtic/Pictish” matriarchy. For more on this theory, see The Origin and Meaning of Courtly Love, Roger Boase, pg 75.
৭৪। Roger Boase (1986). “Courtly Love,” in Dictionary of the Middle Ages, Vol. 3, pp. 667–668.
৭৫। Deirdre O’Siodhachain, The Practice of Courtly Love ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৮-০৮-২০ তারিখে
৭৬। Black, Joseph; Conolly, Leonard; Flint, Kate; Grundy, Isobel; LePan, Don; Liuzza, Roy; McGann, Jerome J.; Prescott, Anne Lake; Qualls, Barry V. (২০১৪-১২-০৮)। The Broadview Anthology of British Literature Volume 1: The Medieval Period – Third Edition (ইংরেজি ভাষায়)। Broadview Press। আইএসবিএন 9781770485549।
৭৭। “Peasants’ Revolt: The Time When Women Took Up Arms”। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩।,
৭৮। “Peasants’ Revolt: The Time When Women Took Up Arms”। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩।
৭৯। Hogenboom, Melissa. “Peasants’ Revolt: The time when women took up arms.” BBC News. BBC News Magazine, 14 June 2012. Web. 7 March 2013.
৮০। “Christine de Pizan and the Book of the Queen”। British Library। ২৭ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৮।
৮১। “Christine de Pisan”। Brooklyn Museum। Elizabeth A. Sackler Center for Feminist Art। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভে ২০১৭।
৮২। Redfern, Jenny (১৯৯৫)। “Christine de Pisan and the Treasure of the City of Ladies: a medieval rhetorician and her rhetoric”। Lunsford, Andrea A.। Reclaiming Rhetorica: Women and in the Rhetorical Tradition। Pittsburgh: University of Pittsburgh Press। পৃষ্ঠা 80।
৮৩। Charity C. Willard, Christine de Pizan: Her Life and Works (New York: Persea Books, 1984, p.135
৮৪। Campbell, Karlyn K., Three Tall Women: Radical Challenges to Criticism, Pedagogy, and Theory, The Carroll C. Arnold Distinguished Lecture National Communication Association November 2001 Boston: Pearson Education Inc, 2003, p. 6
৮৫। Campbell, Karlyn K., Three Tall Women: Radical Challenges to Criticism, Pedagogy, and Theory, The Carroll C. Arnold Distinguished Lecture National Communication Association November 2001 Boston: Pearson Education Inc, 2003, p. 7
৮৬। Bejczy, Istvan P. (২০১১)। “Chapter 1: Does Virtue Recognise Gender? Christine de Pizan’s City of Ladies in the Light of Scholastic Debate”। Green, Karen; Mews, Constant। Virtue Ethics for Women 1250–1500। Springer। পৃষ্ঠা 1–2। আইএসবিএন 9789400705296।
৮৭। Redfern, Jenny R. (১৯৫৫)। “Chapter 5: The Treasure of the City of Ladies: A Medieval Rhetorical and Her Rhetoric”। Lunsford, Andrea A.। Virtue Ethics for Women 1250–1500। University of Pittsburgh Press। পৃষ্ঠা 73। আইএসবিএন 978-0-8229-7165-8।
৮৮। Redfern, Jenny R. (১৯৫৫)। “Chapter 5: The Treasure of the City of Ladies: A Medieval Rhetorical and Her Rhetoric”। Lunsford, Andrea A.। Virtue Ethics for Women 1250–1500। University of Pittsburgh Press। পৃষ্ঠা 74। আইএসবিএন 978-0-8229-7165-8।
৮৯। Redfern, Jenny R. (১৯৫৫)। “Chapter 5: The Treasure of the City of Ladies: A Medieval Rhetorical and Her Rhetoric”। Lunsford, Andrea A.। Virtue Ethics for Women 1250–1500। University of Pittsburgh Press। পৃষ্ঠা 74–75। আইএসবিএন 978-0-8229-7165-8।
৯০। Altmann, Barbara K.; McGrady, Deborah L. (২০০৩)। Christine de Pizan: A Casebook। Routledge। পৃষ্ঠা 57। আইএসবিএন 978-0-415-93909-6।
৯১। Redfern, Jenny R. (১৯৫৫)। “Chapter 5: The Treasure of the City of Ladies: A Medieval Rhetorical and Her Rhetoric”। Lunsford, Andrea A.। Virtue Ethics for Women 1250–1500। University of Pittsburgh Press। পৃষ্ঠা 75। আইএসবিএন 978-0-8229-7165-8।
৯২। Schneir, Miriam (১৯৯৪)। Feminism: The Essential Historical Writings। Vintage Books। আইএসবিএন 978-0-679-75381-0।
Be the first to write a comment.